গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মিদশায় বন্দুকধারীদের একেবারে কাছ থেকে দেখা ও তাদের সাথে কথোপকথনের অভিজ্ঞতা থেকে বেকারির শেফ সুমীর বরাই নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, জঙ্গিরা খুবই শিক্ষিত এবং স্মার্ট। তাদেরকে দেখে কেউ মনে করবে না যে, তারা মানুষ হত্যা করতে পারে।
Read More News
শেফ সুমীর বরাই জানিয়েছেন, সেহেরির সময় মুসলমান জিম্মিদের জন্য মাছ ও চিংড়ি পরিবেশনের আদেশ দেয় জঙ্গিরা। যিনি নিজেও জিম্মিদশায় ছিলেন, পরে কোনোরকমে পালিয়ে বের হতে পেরেছিলেন। এছাড়াও রাতের দিকে বন্দুকধারীরা চা এবং কফি পরিবেশন করতে বলে।
শেফ সুমীর বরাই বলেন, বন্দুকধারীদের ভয়ে সাত-আটজন ওয়াশরুমে পালালেও পরে বন্দুকধারীরা তাদের অভয় দিয়ে বলে, বাঙালিদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা এখানে শুধু বিদেশিদের হত্যা করব।
ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আয়াজ হোসেনকে চলে যেতে বললে সে তার সঙ্গে থাকা দুজন মেয়ে বন্ধুকেও ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু তাদের একজন ভারতীয় ও আরেকজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় এবং তাদের পরনে পশ্চিমা পোশাক থাকায় বন্দুকধারীরা ওই দুজনকে ছাড়তে রাজি হয়নি। দুই বন্ধুকে না ছাড়িয়ে নিজেও চলে আসতে অস্বীকার করে ফারাজ। পরের দিন সকালে ফারাজের লাশও বের করা হয়।
অভিযানে মুক্ত হন অনেকে। তাদের একজন প্রকৌশলী হাসনাত করিম। তিনি তার ১৩ বছর বয়সী সন্তানের জন্মদিন উদযাপন করতে এই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে আরও ছিলেন স্ত্রী এবং আট বছর বয়সী সন্তান। রাতভর আটক থাকার পর গতকাল সকাল ৮টার দিকে কমান্ডো অভিযানে হাসনাতের পরিবার উদ্ধার হয় বলে জানিয়েছেন তার মা। ছেলেকে পাওয়ার পর হাসনাতের মা বলেন, জিম্মিকারীরা বাংলাদেশি মুসলমানদের সূরা পড়তে বলে। সূরা পড়ার পর তাদের রাতে খেতেও দেওয়া হয়।
কমান্ডো অভিযানে অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযানের শেষ পর্যায়ে রেস্টুরেন্টের ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায় মেঝেতে লাশ আর লাশ। প্রতিটি লাশের শুধু গলা কাটা নয়, অনেকের বুকে-পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। মেঝে ভেসে যাচ্ছে রক্তে। ছোট ছোট বাচ্চাদের জড়িয়ে ধরে মহিলারা কাঁদতে ছিল। টেবিলের মধ্যে গ্লাস প্লেট ভাঙা ছিল। জঙ্গিদের চরম নৃশংসতা দেখে মনে হয়েছে তারা মানুষ হত্যা করতেই সেখানে ঢুকেছিল। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর।
CoinWan Latest Banlga Newspaper