বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভাঙ্গার খবর পাওয়া গেছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ি এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে আরো বেশ কিছু ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বোনারপাড়া থেকে রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এসব এলাকার লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নৌকার অভাবে এখনো অসংখ্য মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেছ না।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ভয়ংকর ভাবে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শেরপুরের অবস্থা দ্রুত খারাপ করে তুলেছে। বাঁধের পুরনো ভাঙন অংশ দিয়ে বন্যার পানি দ্রুতবেগে প্রবেশ করে প্লাবিত করে ফেলেছে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা।
Read More News
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ১ মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
সিএনজি অটোরিকশা চলাচল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার মানুষ বন্যা আতংকে ভুগছেন। ইতিমধ্যে শেরপুরের ৫ টি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের মোট ১৭২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষের অবস্থা বিধ্বস্ত। সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এলাকার মোট ৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রলয়ংকারি বন্যায় প্লাবিত হয়ে গেছে।
শেরপুরের পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ৮৭টি, বগুড়ার তিন উপজেলার ৮৬টি, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ১৬টি এবং নীলফামারীর ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বন্যায় ডুবে গেছে গাইবান্ধা রেলপথ। রেলপথ পানির নীচে চলে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটের রেল যোগাযোগ গতকাল বুধবার সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শেরপুর সদরের কুলুরচর-বেপারিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া শতাধিক মানুষের হাতে প্রতি পরিবারে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি চিড়া এবং গুড় বিতরণ করে জেলা প্রশাসন।
তবে শেরপুরে কিছুটা বন্যা আক্রান্তরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য লাভ করলেও ত্রাণ না পাওয়া বন্যার্তদের হাহাকার শোনা যাচ্ছে চারদিকে।