জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী যুবক প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তিই দিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কাছে।
হামলাকারীর নাম ফয়জুর রহমান (২৪)। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশে কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ায় থাকেন ফয়জুর। তিনি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন। ফয়জুর মঈন কম্পিউটার নামে একটি দোকানে কাজ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের একটি উৎসব ছিল। সেই উৎসবে অংশ নিয়ে অন্যদের সঙ্গে মুক্তমঞ্চে বসে ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। যুবক হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর মাথায় ছুরিকাঘাত করেন। আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে সিলেটে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ৮টা ৪০ মিনিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ড. জাফর ইকবালকে ঢাকা নেওয়া হয়েছে।
Read More News
সঙ্গে সঙ্গেই হামলাকারীকে ধরে ফেলে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাতে তাঁকে নেওয়া হয় র্যাব হেফাজতে। হামলাকারী এখন সিলেট সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও প্রত্যক্ষদর্শী তরিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘যে যুবক আমাকে আঘাত করেছে তোমরা তাকে মেরো না, বাঁচিয়ে রাখো।’
র্যাব ৯-এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, ‘জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু, তাই তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করেছি। উনি নিজে নাস্তিক হতে পারেন, কিন্তু সবাইকে নাস্তিক বানানোর জন্য তিনি প্রচার ও প্রসার করে বেড়ান। এই অধিকার তাঁর নেই।’
ভূতের বাচ্চা সোলায়মান নামক একটি উপন্যাসের কথা উল্লেখ করেন হামলাকারী। তিনি বলেন, এই উপন্যাসের মাধ্যমে জাফর ইকবাল নবীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। তাই আমি হামলা করেছি। এর বাইরে আর কিছু জানতে চাওয়া সম্ভব হয়নি। সে সুস্থ হলে আমরা এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর প্রতিবাদে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস ও রাজধানীর শাহবাগের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
CoinWan Latest Banlga Newspaper