কর স্বর্গের দেশে টাকা রাখার কারণ কি?

পানামা পেপার্স নামে পরিচিত দলিলপত্র ফাঁস হওয়ার পর ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের কর ফাঁকির প্রতিবাদে পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়েছে।
বেরিয়ে এসেছে নানা দেশের নামী দামি ক্ষমতাধর রাজনীতিক থেকে শুরু করে সেলিব্রেটি- অনেকের কর ফাঁকির গোপন তথ্য ।
পানামা পেপার্সে নাম ওঠার পর আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
পানামার একটি লিগ্যাল ফার্ম মোসাক ফনসেকা থেকে এসব গোপন দলিল ফাঁস হয়ে যায়।
কিন্তু কর ফাঁকি দেয়ার জন্য ট্যাক্স হ্যাভেন বা কর স্বর্গ বলে পরিচিত দেশগুলোয় টাকা রাখার কারণ কি?
লন্ডনের স্কুল অফ অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অর্থনীতির শিক্ষক মুশতাক খান বলছিলেন, অনেক ছোট ছোট দেশ আছে যেখানে করের হারই শুধু কম নয়। ব্যাংকিং বসটা এবং বিধি-নিষেধ অনেক শিথিল। এসব দেশে টাকা নেয়া এবং রাখা আকর্ষণীয় দুটি কারণে।
প্রথমত, অনেক বৈধ কোম্পানি তাদের আন্তর্জাতিক কর কমানোর জন্য এসব দেশে টাকা জমা রাখে। এটা বেআইনি নয়। কিন্তু নৈতিকভাবে সমালোচনা যোগ্য। কারণ যে দেশে তারা টাকা বানাচ্ছে সেসব দেশে কর না দিয়ে এমন সব দেশে রাখছে যেখানে তাদের কম কর দিতে হয়, বলছিলেন মিস্টার খান।
Read More News

তিনি বলেন, এর পাশাপাশি কিছু লোক সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে টাকা করেছে, লুট করেছে বা চুরি করেছে। তারাও এইসব স্থানে টাকা রাখে। তাদের উদ্দেশ্য শুধু কর কম দেয়া না, তাদের উদ্দেশ্য চুরি করা টাকাটা লুকিয়ে রাখা।
তিনি বলেন, “এখন সমস্যাটা এমন পর্যায়ে চল গেছে যে, অনেক ধরনের বেআইনি চুরি ও লুটাপটের টাকা এসব দেশে চলে যাচ্ছে। সেগুলোকে ধরা খুব কঠিন হচ্ছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের মন্ত্রী এমপিরা অবৈধভাবে যেসব টাকা তৈরি করেন সেগুলো এই ট্যাক্স হেভেনে চলে যাচ্ছে”।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যখন ট্যাক্স হেভেনে চলে যাচ্ছে তখন সেই দেশগুলোর কি ক্ষতি হচ্ছে?
এমন প্রশ্নে মিস্টার খান বলেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানি কোন দেশে টাকা বানাচ্ছে সেটা ধরা খুব কঠিন। যে দেশের লোকেরা তাদের পণ্য কিনছে বা সেবা কিনছে সেখানে তারা কর দিচ্ছে না। সেই দেশের সরকার ওই করের থেকে সাধারণ মানুষের সেবা বাড়াতে পারছে না।
আইনের আওতায় এবং নজরদারিতে আনা কঠিন কাজ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে এ বিষয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাধারণ মানুষের যে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে, সেটির ফলে ক্রমশ এই ধরনের টাকা লুকিয়ে রাখাটা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *