পারিবারিক সহিংসতার শিকার হলে কী করবেন?

বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভালোভাবে সম্পর্ক গড়ার পর সে সম্পর্ক ক্রমে বাজে দিকে গড়াতে থাকে। একপর্যায়ে তা অবমাননাকর হয়ে উঠতে পারে। অনেকেই সম্পর্কের নানা টানাপড়েনে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেন। কিন্তু আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। সম্পর্ক যদি অবমাননাকর হয়ে ওঠে কিংবা সঙ্গী যদি অত্যাচার শুরু করে তাহলে করণীয় কী হতে পারে? এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। বিশ্বে প্রতি চার সেকেন্ডে একজন ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। এটি প্রতিবছর সাড়ে আট লাখ মৃত্যুর জন্য দায়ী। আর এ মৃত্যুর বড় একটি অংশের জন্য দায়ী গৃহ নির্যাতন। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে বহু নারীই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া রয়েছে পরকীয়া সম্পর্ক, বিশ্বাসভঙ্গ, ডিভোর্স ইত্যাদি কারণ। এ ক্ষেত্রে একজন ভুক্তভোগীর করণীয় কী হতে পারে? এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা উচিত সবারই।
Read More News

ভুক্তভোগী দুর্বল নয়
পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের জানা থাকা উচিত যে, তারা কখনোই দুর্বল নন। এর কারণ শক্তিশালী আইন। নতুন বেশ কয়েকটি আইনে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। যেকোনো সম্পর্ক যদি অবমাননাকর পর্যায়ে পৌঁছায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। নারীরা সাধারণত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়। এ কারণে নারীদের জন্য এ ধরনের আইনে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অবমাননাকর সম্পর্ক অত্যন্ত জটিল বিষয়। যে পুরুষেরা নারী নির্যাতন করেন তারা সাধারণত পরবর্তীতে নারীদের আবেগগতভাবে দুর্বলতার সুযোগ নেন। দুঃখ প্রকাশ ও নানা প্রলোভনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থেকে নারীদের দূরে রাখেন। যদিও পরবর্তীতে সে নির্যাতন আবার শুরু হতে পারে।

আইন যা বলছে
যেকোনো বৈবাহিক সম্পর্ক যদি অবমাননাকর হয়ে ওঠে তাহলে নারীরা তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে আইনের আশ্রয় নিতে কোনো বাধা নেই। পাশাপাশি কোনো ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আর্থিক বিষয়াদি নিয়েও আইনের আশ্রয় নেওয়া যায়। যে কোনো সম্পর্ক যদি নির্যাতন কিংবা অন্য কোনোভাবে হয়রানিমূলক হয়ে ওঠে তাহলে নারীদের নিজে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে হবে। এতে নির্যাতনকারীর জেল ও আর্থিক জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা জামিন অযোগ্য হওয়ায় নির্যাতনকারীর জামিন পাওয়া কঠিন। এ ছাড়া নারী নির্যাতনের আরও কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন খাবার না দেওয়া, যৌন নির্যাতন, যৌতুক দাবি ইত্যাদির বিরুদ্ধে শক্ত আইন রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে শক্ত আইন থাকায় কোনো নারীর আত্মহত্যার মতো পথে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যথাযথ আইন মেনেই নির্যাতনকারীর শাস্তি দেওয়া সম্ভব।

যে কারণে সম্পর্ক বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে
প্রত্যেক সম্পর্কেরই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন পর্যায় রয়েছে। এখানে কোনো একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠা মানেই তা যে সব সময় টিকে থাকবে এমনটা সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে। সম্পর্ক যদি বিরূপ হয়ে যায় এবং জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে তাহলে তা ত্যাগ করাই ভালো। আর এ ক্ষেত্রে যথাযথ আইন থাকায় তা এখন খুব সহজ। সম্পর্কজনিত হতাশায় অনেকেই যথাযথ করণীয় না জানার কারণে নিজেকে শেষ করে দিতে চান। যদিও এটি মোটেই উচিত নয়। আপনার আশপাশের কোনো মানুষের যদি সম্পর্কের কারণে হতাশা দেখা দেয়, জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি হয় তাহলে সেজন্য পর্যাপ্ত আইনি ব্যবস্থার কথা জানানো প্রয়োজন। নিজেকে শেষ করে দেওয়ার তুলনায় এসব আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা শতগুণে উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *