বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পরিপ্রেক্ষিতে এফবিআইর পরামর্শের পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে বলেছে দেশটির ব্যাংক খাত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ।
ইউএস ফেডারেল ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনাল এক্সামিনেশন কাউন্সিল মঙ্গলবার এই নির্দেশনা দেয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স, যাতে নিউ ইয়র্কের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ওয়াশিংটনের উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট মেসেজে ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরানোর প্রেক্ষাপটে দুই সপ্তাহে আগে ব্যাংকগুলোকে সম্ভাব্য সাইবার হামলার চিহ্ন খতিয়ে দেখতে ওই পরামর্শ দিয়েছিল এফবিআই।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের ওই অর্থ ফিলিপাইনে সরানোর পর এফবিআই, ফিলিপাইনের মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ সংস্থা এবং বাংলাদেশের সিআইডির পাশাপাশি কয়েকটি দেশের তদন্তকারী সংস্থা ও সাইবার নিরাপত্তায় পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে।
Read More News
বিশ্ব জুড়ে ব্যাংকগুলোতে অর্থ লেনদেনের বার্তা প্রদানকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন তথা সুইফটের বাংলাদেশ ব্যাংকের নেটওয়ার্কে ম্যালওয়ার বসিয়ে রিজার্ভ চুরির ওই কাণ্ড ঘটানো হয় বলে বলা হচ্ছে। বিশ্বের ২০টিরও বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইফটের নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে, যার সঙ্গে মুদ্রা আদান-প্রদানে আরও যুক্ত রয়েছে ১১ হাজারেরও বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
এতে যুক্ত কোনো ব্যাংক তার একাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তরের জন্য সুইফট সিস্টেমে মেসেজ পাঠায়, তখন সেই নির্দেশ অনুযায়ী অর্থ স্থানান্তর হয়। হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ঢুকে পড়েছিল বলে দাবি করেছে সুইফট।
যে অপরাধী চক্র এ ধরনের প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ভেঙেছে তারা গোপনে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে এবং ফের একই ধরনের কাণ্ড ঘটাতে পারে বলে সাইবার নিরাপত্তাদাতা কয়েকটি সংস্থার সাবধানতা উচ্চারণের মধ্যে এফবিআইয়ের তাগাদা ছিল, একই গ্রুপের টার্গেটে রয়েছে কিনা সেজন্য ব্যাংকগুলোর নেটওয়ার্কে কারিগরী কোনো ক্লু খোঁজা।
ফেডারেল ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনাল এক্সামিনেশন কাউন্সিলের বিবৃতিতে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার চর্চা, তথ্য-প্রযুক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ এবং জালিয়াতি শনাক্তকরণ, যাছাইকরণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াসহ পুরো হোলসেল পেমেন্ট সিস্টেম নেটওয়ার্ক পর্যালোচনা করা।